ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় শ্বাশুর চেয়ারম্যান-জামাই পিএস!

pic syeednur chairman pekua 18-06-16পেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুরের ব্যক্তিগত সহকারি তার মেয়ের জামাতা সোলয়েমান বাদশাহ বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ইউপিতে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় নিযুক্ত সচিব রয়েছেন। তবে চেয়ারম্যান তার ব্যক্তিগত কাজ দেখাভাল করতে প্রাইভেট সেক্রেটারী (পিএস) রাখেন। সরকারীভাবে নিয়োগ দেয়া না হলেও সকল ইউপিতে প্রচন্ড ক্ষমতাধর হচ্ছেন পিএসরা।

 চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় কার্যাদি অঘোষিতভাবে পিএসরা নিয়ন্ত্রন করেন। রাজাখালীতে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুরের ব্যক্তিগত প্রাইভেট সেক্রেটারী তার মেয়ের জামাই। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ছৈয়দ নুর চেয়ারম্যানের জামাই সোলেয়মান বাদশাহ তার সহকারি হিসেবে মাথার ছায়ায় পরিনত হয়েছে। চেয়ারম্যান ওই জামাই একই হোন্ডায় চলাফেরা করেন। রাজাখালীতে চেয়ারম্যানের সবকিছু দেখাভাল করেন জামাতা।

 বিচার শালিস, উন্নয়ন, বন্টনসহ নানাবিধ সব কাজ চেয়ারম্যানের পক্ষ হয়ে জামাই পরিচালনা করেন। চেয়ারম্যানের সফর সঙ্গি ও শালিসি প্রতিনিধিতেও অর্ন্তভুক্ত করা হয় জামাইকে। রাজাখালীতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ছৈয়দ নুর। কিন্তু প্রচন্ড ক্ষমতা ব্যবহার করছেন তার জামাই। সোলেয়মান বাদশাহ শ্বাশুরের চেয়ারম্যানীকে পুঁিজ করে রাজাখালীতে দাপটি বাদশাহ পরিনত হয়েছেন। মানুষ এখন আর চেয়ারম্যানকে খোঁজছেনা। খোঁজছেন জামাই বাদশাহকে। বাদশাহ যা বলেন এবং করেন তা বাস্তবায়ন হয় রাজাখালীতে।

 চেয়ারম্যানের কাছে জামাই অন্ধ বিশ্বাসী। অন্যায় করুক আর ন্যায় করুক জামাই বললে শ্বাশুরের কাছে চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়। রাজাখালীতে চেয়ারম্যানের চেয়ে গুরুত্ব বেড়ে গেছে পিএসএর। শ্বাশুর চেয়ারম্যান হওয়ার পর দু’মাসের মাথায় আমুল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে জামাই বাবুর। চলাফেরা, কথা বার্তায় এসেছে অভাবনীয় পরিবর্তন। এক সময় লুঙ্গি পরে চলাফেরা করতেন জামাই। কিন্তু সে ধারার হঠাৎ যুগপৎ পরিবর্তন হয়েছে। মিলছে টাকা পয়সাও। সংসারে স্বচ্ছলতা আসলে পরিবর্তন দেখা দেয় সবকিছুতে। তাই জামাই বাবুর বেলায় হয়েছে। রাজাখালীতে হঠাৎ আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মত হয়েছে ছৈয়দ নুর চেয়ারম্যান ও তার জামাই বাদশাহ’র বেলায়।

 স্থানীয়রা জানিয়েছেন চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুরের চার স্ত্রী রয়েছে। বাদশাহ’র স্ত্রী শারমিন আকতার চেয়ারম্যানের তৃতীয় স্ত্রীর মেয়ে। ওই সংসারে শারমিন একমাত্র সন্তান চেয়ারম্যানের। গত চার বছর আগে একই ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকার মকবুল আহমদের ছেলে সোলেয়মান বাদশাহ’ সম্পর্ক করে বিয়ে করেন শারমিন আক্তারকে। গত ৩১মার্চ পেকুয়ায় ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে রাজাখালীতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ছৈয়দ নুর। এলাকায় তার সুনাম এর পাশাপাশি ব্যাপক বদনামও আছে। এরপরেও জনপ্রিয়তায় শীর্ষ থাকায় জনগন তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন।

 বদিউদ্দিন পাড়ার মৃত.কাছিম আলীর ছেলে ছৈয়দ নুর। এক সময়ের উপকুলের দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার পেকুয়া-চকরিয়া, কুতুবদিয়া-বাঁশখালী ও মহেশখালীসহ আরো একাধিক থানায় তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, অস্ত্র, হত্যাসহ দেড় ডজন মামলা রয়েছে। প্রায় ১০বছরের অধিক সময় কারাগারে অন্ধ প্রকৌষ্টে সময় গিয়েছে তার। একটি মামলায় তার সাজাও হয়। ছৈয়দ নুর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর রাজাখালীতে একাধিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। তার সাথে আ’লীগের বেড়েছে দুরুত্ব। তার ভাইজি জামাই রাজাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আনছারুল ইসলাম টিপুর দ্বন্ধ চলছে। টিপু একজন ব্যবসায়ী।

 স্থানীয়রা জানায় চেয়ারম্যান ভোটের সময় টিপুর কাছ থেকে টাকা দাবি করে। কিন্তু টিপু নৌকার পক্ষে ভোট করেছে। এ সুবাধে জেঠা শ্বাশুরের সাথে তার দ্বন্ধ প্রকট আকার ধারন করে। এর জের ধরে জামাই-শ্বাশুরের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। বর্তমানে দু’জনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হচ্ছে। জামাই বাদশাহ কিছুতেই ছাড় দিচ্ছেনা তার ভাইরাকে। সম্প্রতি রাজাখালীতে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। চেয়ারম্যানের জামাই পিএস বাদশাহ এসবের নেপথ্যের মুল বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন। এখন রাজাখালীবাসির প্রশ্ন তাদের চেয়ারম্যান কে। ছৈয়দুর নাকি জামাই বাদশাহ।

পাঠকের মতামত: